শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি : নবনিযুক্ত ডাক,টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বাংলাদেশের সর্বত্র ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়াকেই সবার আগে অগ্রধিকার দেবেন তার কাজে। মোস্তফা জব্বার জিনি কম্পিউটারের বাংলা লেখার জনপ্রিয় সফটওয়্যার বিজয়ের উদ্ভাবক হিসেবেই বেশি পরিচিত। গত বৃহস্পতিবার তিনি মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বড় একটি সংগঠন বেসিসের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বের মেয়দ যখন আর মাত্র এক বছর সেখানে তিনি দায়িত্ব নিয়ে কতটুকু কি করতে পারবেন?
বিবিসি বাংলাকে এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা জব্বার বলেন, এক বছর যদি গণনা করা হয় তাহলে খুবই অল্প সময় এটি ঠিক। তবে তার কাছে সবচেয়ে সুবিধা হচ্ছে ২০০৯-১৭ পর্যন্ত বর্তমান সময় কালে সরকার এবং তার সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দেশকে ডিজিটালে রুপান্তরের জন্য যেভাবে কাজ করে এসেছে এটাকে প্রাথমিক প্রস্তুতি না বলে মোটামুটি একটি ভালো প্রস্তুতির জায়গা করে দিয়েছে সরকার, তা বলা যায়। এর ফলে এক বছরে যে কাজটি করা হবে সেখানে ৯ বছরের কাজের ফলাফল এক বছরের কাজে জমা হবে। তাই এক বছরের সময় কম মনে করছেন না তিনি।
কাজের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে?
এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা জব্বার বলেন, ইন্টারনেট হচ্ছে মহাসড়ক, আর এই মহাসড়ক যদি প্রস্তুত আর মসৃন করা যায় তাহলে যে চলাচলের পথটি তৈরি হবে, তা হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরির বড় অংশ। মোস্তফা জব্বারের আর একটি লক্ষ্য হচ্ছে ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো এবং ইন্টারনেটকে সাশ্রয়ী করে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
তিনি আরো বলেন, সরকারে যে ডিপ্লোমা পদ্ধতি আছে তাকে ডিজিটাল করতে চান তিনি। তার জন্য সরকার জনগণের কাছে কেমন করে সেবা দিতে পাওে, তার সাথে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সরকার পরিচালনা পদ্ধতি কেমন করে ডিজিটাল হতে পারে ইত্যাদি।
এর পরের অগ্রাধিকার হলো, শিক্ষাকে ডিজিটালে রুপান্তর, একই সাথে বাংলাদেশ ডিজিটাল ডিভাইজের ক্ষেত্রে আমদানিকারক নির্ভরশীল দেশ ছিল। সে জায়গাতে বাংলাদেশকে উৎপাদক না আমদানি-রফতানিকারক দেশ হিসেবে রুপান্তর করতে চান তিনি।
আন্তর্জাতিকভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। সেখানে মন্ত্রণালয়ের সব কাজ বাংলায় করতে নিদের্শ দিয়েছেন মন্ত্রী। বাংলায় কাজ করার বিষয়টি কি বাস্তব সম্মত?
এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা জব্বার বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে যদি যোগাযোগ করতে হয় তাহলে জাপানের সাথে যদি যোগাযোগ করতে জাপানি ভাষায় যোগাযোগ কর ভালো হবে। আবার যদি মধ্যপ্রাচ্যের সাথে যোগাযোগ করতে তাহলে তাদের সাথে আরবি ভাষায় যোগাযোগ করলে ভালো হয়। অন্য দিকে ইংরেজিতে যদি যোগাযোগ করতে হয় সেখানে যে ইংরেজিতে যোগাযোগ করবো না সে কথা বলিনি। তবে যে লোকটি বাংলাদেশে থেকে ব্যবসা করবে অথচ বাংলায় চিঠি পাঠাবেন না, সেটা উচিত না। বাংলা শিখে বাংলাদেশে ব্যবসা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। আমি যখন জাপানে ব্যবসা করতে যাই, সেখানে জাপানি ভাষা শিখে ব্যবসা করতে হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন, একটি বিষয় ভুলে যাওয়া ঠিক না বাঙালী একমাত্র জাতি যে নিজের রক্ত দিয়ে ভাষা রক্ষা করেছে। অনেকেই যদি মনে করেন যে বাংলা ভাষা মন্ত্রণালয়ে প্রচলনের কথা বলাতে এটি ভুল কিছু করেছি, এটা ঠিক না। সংবিধানকে মাথার ওপরে রাখি এবং বাংলাদেশের সংবিধানকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। বর্তমানে সেই মন্ত্রণালয়েরই মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। সেখানে সার্থের সংঘাত যাতে না হয় তা কিভাবে নিশ্চিত করবেন?
এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনা করেছেন ১৪ বছর। এই ১৪ বছরের মধ্যে বর্তমান সরকারের সাথে তার প্রতিষ্ঠান কোন ধরণের ব্যবসা করেনি। সে জায়গা থেকে তিনি বলেন, আমার জন্য সার্থের সংঘাতের কোনো ধরণের ইস্যু নেই। তিনি আরো বলেন, আমার কোম্পানি যদিও ব্যবসা করে এবং পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতা করে যদি ব্যবসা পায় তাহলে সেখানে আপত্তি করার মতো কিছুই থাকবে না।